কফ, কাশি, শ্বসকষ্ট দূর করুন মাত্র দুটি উপাদান দিয়ে।
বুকে জমাট বাধা কফ, কাশি, তীব্র শ্বাসকষ্ট এমনকি খুসখুসে কাশি বা সর্দি, গলাব্যথা সব দূর হবে মাত্র ৩ দিনে। শুধুমাত্র ২টি উপাদান সঠিক পদ্ধতিতে এবং সঠিক পরিমাণে খেতে হবে।
কেন ২টি উপাদান সঠিকভাবে সেবন করলে এই সব রোগ দূর হবে তা বিস্তারিত ভাবে আপনাদের জানাব।
বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য লেখাটি অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ুন, তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কেন এই ২টি উপাদান আপনার এই সকল রোগ ৩ দিনে দূর করতে পারবে। ( গলায় কফ আটকে থাকলে কি করনীয় )
কেন কমলা আপনার এই রোগ সারাবে। তার কারন কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান আপনার ফুসফুসের রোগ সহ সর্দি-কাশি সব রোগ দূর করতে পারবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে
দেবে।
এছাড়া শরীরকে যেকোনো রকম সংক্রমণের হাত থেকেও বাঁচাবে। আরেকটু বিস্তারিতভাবে বলছি। কমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এর পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বিটা ক্যারোটিন এর মত ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ্য যা ফুসফুসকে যেকোনো সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এমনকি ফুসফুস ক্যান্সারের মতো মারন রোগ থেকে রক্ষা পাবে কমলা যদি সঠিকভাবে খেতে পারেন। ( বুকে কফ জমার লক্ষণ )
আবার কমলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ডায়টারিফাইবার। তাই কমলা শুধুমাত্র সর্দি-কাশি, ঠান্ডা শ্বাসকষ্টই নয় আপনার শরীরের আরো অনেক রোগ দূর করবে। কি কি, যেমন কমলা পেটের সকল রোগ দূর করতে পারবে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যা সহ গ্যাস, এসিডিটি, বদহজম সব দূর হবে কমলা যদি সঠিক ভাবে খাওয়া যায় ।
আবার কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম এর ভারসাম্য বজায় রাখতে দারুন ভাবে কাজ করে কমলা। কমলা খেলে খিদে বাড়ে এবং খাওয়ার যে অরুচি থাকে মানুষের সে সব সমস্যা দূর হয়। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে কমলা সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লিভার কিংবা হার্ট যাই বলেন না কেন কমলা খুব দ্রুত আপনার এইসব রোগ সারাবে। যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে সর্দি কাশিতো লেগেই থাকে সেই সাথে হয় পেটে নানান ধরনের অসুখ। তাই কমলা যদি খান তাহলে রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা এতটাই বাড়বে যে আপনার শরীরে এই সকল অসুখের জিবানু দাঁড়াতে পারবেনা। ( বুকে কফ জমার ওষুধ )
কমলায় থাকা পটাশিয়াম হার্ট ভালো রাখে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক কারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এই ফলটি খুব উপকারী। কারণ এই ফল যদি সঠিকভাবে খাওয়া যায় তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই ডায়াবেটিস এবং মেটাবলিক সিনড্রোম রোগীদের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমলা খেতে বলা হয়েছে।
সকল ধরনের রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পেতে এখানে দেখুন
কমলার পুষ্টিগুণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আসলেই খুব উপকারী। কমলার একটি বিশ্বয়কর এবং অজানা গুন হচ্ছে কমলা দৃষ্টি শক্তিকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ।
তাই কমলা যদি খেতে পারেন তাহলে রাত কানা রোগ তো দূর হবেই সেই সাথে দৃষ্টি শক্তি এত বেড়ে যাবে যে, যাদের চশমা পড়ে কাজ করতে হতো তারা চশমা ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে সব কাজ করতে পারবেন। আবার এতে যে পরিমান ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা আপনার ত্বক এবং চুলকে খুব সুন্দর করে তুলবে। কমলাকে সৌন্দর্যের ফল বলা হয়। ( বুকের কফ বের করার ঔষধ )
কমলা খেলে ত্বকের সৌন্দর্য ভেতর থেকে বৃদ্ধি পাবে। ত্বকে বলিরেখা পড়েবে না এবং অনেকদিন পর্যন্ত আপনার বয়স একদম তারুন্যে আটকে থাকবে কমলা খেলে। কমলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে পেকটিন এবং ফাইবার যা অনেক্ষন পেট ভরিয়ে রাখে এবং ওজন দ্রুত হ্রাস করে।
কমলে খেলে পেটের সমস্যা কোষ্টকাঠীন্য তো দূর হবে সেই সাথে আপনার অতিরিক্ত মেদ চর্বিও ঝরে যাবে। তাই ওজন কমবে হু হু করে। কমলার গুনাগুন শুনে বুঝতেই পারছেন ঠান্ড, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ঠ ভালো হওয়ার পাশাপাশি কমলা আপনার শরীরের আর কি কি রোগ দূর করবে এবং আপনাকে কতটা সুস্থ রাখবে।
এবার বলছি ২য় উপাদানটির কথা।
২য় উপাদান হলো রসুন। রসুনে রয়েছে বিষ্ময়কর একশরও বেশি রাসায়নিক উপাদান। এই জন্যই রসুন অবশ্যই আপনাকে সঠিক ভাবে খেতে হবে। রসুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক শক্তিশালি এন্টিবায়োটিক। কারন রসুনে আছে একি সাথে এন্টিবেকটেরিয়াল, এন্টিভাইরাল,এন্টিফাঙ্গাল,অক্সিডেন্ট উপাদান।
রসুন যদি কেউ সঠিকভাবে খেতে পারেন তাহলে তার শ্বাস তন্ত্রের সকল রোগ দূর হবে সেই সাথে রসুন আপনাকে আরো যে যে রোগ থেকে বাঁচাবে সেটাও আপনি জেনে নিন তাহলেই বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের জন্য রসুন কতটা উপকারী। ( বুকে কফ জমলে কি কি সমস্যা হয় )
যদি কারো হুপিং কাশি, হাঁপানি, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস বা ফুসফুসে কনজেশন হয়ে থাকে তাহলেও রসুন খাওয়ার কথা বলব।
রসুনে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে সঠিক ভাবে রসুন খেলে আপনার এই রোগ গুলো দূর হবে। আবার রসুন পেটের জন্য খুব ভালো। কারণ রসুন যদি খাওয়া যায় তাহলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে তাদের কাজ করতে পার ফলে পেটের সব সমস্যা দূর হয়।
আবার রসুন খেলে গ্যাস, এসিডিটি দূর হওয়ার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেট কষার সমস্যারও সমাধান হয়।
রসুন খেলে আপনার যক্ষ্মা বা টিবি রোগ একদমই ভালো হবে। অনেক মানুষেই আজকাল রক্তচাপে ভুগছেন তাদের বলব অবশ্যই আপনি রসুন খাবেন। রসুন খেলে আপনার রক্তচাপ সারাজীবন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে এক্ষেত্রে একটি কথা না বললেই নয় যাদের নিম্ন রক্তচাপ আছে এবং এর কারণে দূর্বলতায় ভুগছেন তারা বেশি মাত্রায় রসুন খাবেন না। এতে রক্তচাপ আরো কমে যেতে পারে। শরীরকে একদম ভেতর থেকে ডিঅক্সিফাইড করে রসুন।
কারন রসুনে রয়েছে এমন উপাদান যা রক্ত পরিষ্কার করতে পারে। এই জন্য রসুন খেলে কৃমি, সাংঘাতিক জ্বর, বিষন্নতা, ক্যান্সার বা কিডনির সমস্যা সহ শরীরের সকল রোগ ভালো হবে।
রসুন খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এজন্য ডায়াবেটিস রোগীরা রসুন খেলে উপকার পাবেন। আবার যাদের হার্টে-জয়েন্টের ব্যথা বা পেশির ব্যথা রয়েছে তাদের জন্য রসুন খুব ভালো, শরীরের জন্য ভালো কাজ করে।
ঠান্ডা জনিত সকল রেগের পাশাপাশি রসুন সাইনোসাইটিসের সমস্যা দূর করতে পারে। এই জন্য যাদের নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং সাইনোসাইটিসের কারণে মাথাব্যথা করে তাদের জন্য রসুন খুব কার্যকরী।
এখন বলছি রসুন এবং কমলা একত্রে কিভাবে খেলে আপনার ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বুকে জমা কফ এবং খুশখুশে কাশির মতো সমস্যা তিন দিনে দূর হবে।
এই জন্য একটি কমলা এবং ২ থেকে ৩ কোয়া রসুন নিতে হবে। রসুনের কোয়া যদি ছোটো হয় তবে ৩ কোয়া আর না হলে দুটিই যথেষ্ট।
রসুন এবং কমলার খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং রসুনগুলো টুকরো করে কেটে নিন।
এরপর রসুনের কুচি গুলো কমলার কোয়ার মধ্যে ঢুকিয়ে দিন।
কোয়ার আশ এবং বিচি সহ আপনাকে প্রতিটি রসুন সহ কোয়া ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে। যদি এইভাবে প্রতিদিন একবার করে রাতে ঘুমানোর আগে আপনি খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের সব রোগ দূর হবে।
যারা এমনিতেই সকালবেলায় রসুন সেবন করে থাকেন তারা রাতে রসুন সেবন এভাবে করবেন না।
কারন দিনে বেশি মাত্রায় রসুন খেলে আপনি দূর্বল হয়ে পড়বেন। এই জন্য যারা সর্দি, কাশি সারানোর জন্য রাতে কমলা এবং রসুন খাবেন তারা সেই কদিন সকাল বেলা রসুন খাওয়া বন্ধ রাখুন।
এই ভাবে চিবিয়ে খেতে পারবেন না তাদেরকে বলবো কমলা ভালো করে চপে রস করে নিন। হাত দিয়ে রস তৈরি করুন ব্লেন্ডার ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই। এরপর কমলার রসের সাথে রসুন খুব ভালো করে মিশয়ে রাতে ভালো করে খেয়ে নিন।
দেখবরন খাওয়া মাত্রই আপনার ঠান্ড জনিত রোগের উপসম হতে শুরু করেছে। এ ছাড়া শরীরের আর যে সব রোগের কথা বললাম সব নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
এই রেমিডিটি শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই খেতে পারে। আপনার শিশুর বয়স দুই বছর হলেই তাকে ঠান্ডা সর্দি কাশি সারানোর জন্য এইভাবে কমলার রসের সাথে রসুন মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একটি কমলার রসের সাথে হাফ চা চামচ রসুনের রস মিশিয়ে রাতে খাওয়াবেন।
মনে রাখবেন তাহলে রাতে তাকে দুধ জাতীয় কোন খাবার খাওয়ানো যাবেনা। শুধু মাত্র ভাত খাওয়ানো পরেই এই রসুন এবং কমলার রেমিডিটি খাওয়াবেন। তবে কখনোই ভরপেট খাওয়ার পরপরই এই রেমিডিটি গ্রহণ করবেন না। ন্যূনতম আধাঘন্টা বাদে এই রেমিডিটি আপনাকে সেবন করতে হবে।
0 Comments