উন্নত জাত নির্বাচন :-
জমি তৈরি :- সূর্যমুখীর জমি গভীরভাবে চাষ হওয়া প্রয়োজন । জমি ৪-৫ বার আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে ।
বপনের সময় :- সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায় । খরিফ -১ মৌসুমে অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ ( মধ্য - এপ্রিল থেকে মধ্য - মে ) মাসে এর চাষ করা যায় ।
বপন পদ্ধতি ও বীজের হার :- সূর্যমুখীর বীজ সারিতে বুনতে হয় । সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সেমি এবং সারিতে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সেমি রাখতে হয় । এভাবে বীজবপন করলে হেক্টরপ্রতি ৮-১০ কেজি বীজের প্রয়ােজন হয় ।
সারের মাত্রা ( হেক্টর প্রতি ) :- সূর্যমুখীতে নিম্নরূপ পরিমাণে সার ব্যবহার করলে ভাল ফলন পাওয়া যায় ।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি :- ইউরিয়া সারের অর্ধেক এবং বাকি সব সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে । বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ২ ভাগ করে প্রথম ভাগ চারা গঁজানাের ২০-২৫ দিন পর এবং দ্বিতীয় ভাগ ৪০-৪৫ দিন পর বা ফুল কোটার পূর্বে প্রয়ােগ করতে হবে ।
সেচ প্রয়ােগ :- সূর্যমুখী ফসলের ফলন বেশি পেতে হলে কয়েকবার পানি সেচ দিতে হবে । প্রথম সেচ বীজবপনের ৩০ দিন পর ( গাছে ফুল আসার আগে ) , দ্বিতীয় সেচ বীজবপনের ৫০ দিন পর ( পুষ্পস্তবক তৈরির সময় ) এবং তৃতীয় সেচ বীজবপনের ৭০ দিন পরে ( বীজ পুষ্ট হবার আগে ) দিতে হবে ।
সূর্যমুখীর রােগবালাই ব্যবস্থাপনা :-
পাতা ঝলসানাে রােগরে লক্ষণ :- ছত্রাকের আক্রমণে সূর্যমুখীর এ রােগটি হয়ে থাকে । প্রথমে পাতায় ধূসর বা গাঢ় বাদামি বর্ণের অসম আকৃতির দাগ পড়ে । পরে দাগ মিশে গিয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে । অবশেষে সম্পূর্ণ পাতা ঝলসে যায় ।
সমন্বিত ব্যবস্থাপনা :-
> রােগ সহনশীল কিরণী জাত চাষ করতে হবে ।
> রােগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে রােভরাল -৫০ ডব্লিউ পি ( ২ % হারে ) অর্থাৎ ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার জমিতে প্রয়ােগ করলে রােগের প্রকোপ কমে যায় ।
> ফসল কাটার পর গাছের পরিত্যক্ত অংশ নষ্ট করলে বা পুড়ে ফেললে এ রােগের উৎস নষ্ট হয়ে যায় ।
সূর্যমুখীর শিকড় পচা রােগের লক্ষণ :- আক্রান্ত গাছের গােড়া সাদা তুলার মত ছত্রাকের মাইসেলিয়াম এবং গােলাকার দানার মত স্কেলেরােশিয়াম দেখা যায় । প্রথমে গাছ কিছুটা নেতিয়ে পড়ে । কয়েক দিনের মধ্যে সমস্ত গাছ ঢলে পড়ে এবং শুকিয়ে মারা যায় ।
সমন্বিত ব্যবস্থাপনা :-
> ভিটাভেক্স -২০০ এর সাহায্যে মাটিশোধনের মাধ্যমে এ রােগের বিস্তার রােধ করা যায় ।
> সাধারণত জমিতে পানিসিক্ত থাকলে এ ছত্রাক বাঁচতে পারে না । সুতরাং রোগ আক্রমণের পর জমিতে প্লাবন সেচ দিয়ে প্রকোপ কমানাে যায় ।
> পর্যায়ক্রমিক ভাবে ফসলের চাষ করলে উপযুক্ত পােষক গাছের অভাবে পূর্ববর্তী আক্রমণকারী দােগের বিস্তার রােধ করা যায় ।
ফসল সংগ্রহঃ বপন থেকে পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত ৯০ থেকে ১১০ দিন সময় লাগে ।
1 Comments
Nice post Here
ReplyDelete